সিল করা হল বর্ধমানের ২টি নার্সিংহোম,আটক ৩
বর্ধমান জেলাশাসক
Published Tue, Nov 29, 2016
বর্ধমান : সারি দিয়ে দড়িতে টাঙানো জামা-কাপড়,বিছানার চাদরে রক্তের ছোপ,ঘর জুড়ে দুর্গন্ধ। না,না পাড়ার কোন ক্লাবের নয়, এ ছবি বর্ধমান শহরের নবাবহাট নার্সিংহোমের অপারেশন থিয়েটারের। সেখানেই রয়েছে রেফ্রিজারেটর। তার ভেতরেই ওঁত পেতে আছে মৃত্যু। ফ্রিজ খুলতেই চোখে পড়ল, রক্ত,ওষুধ,খাবারের সহবাস অন্দরমহলে। তবে শুধু নবাবহাট নার্সিংহোম নয়, এ ছবি দেখা গেল শহরের আরও তিনটে নার্সিংহোমে।
শিশু পাচারচক্রের হদিশ মেলার পর,সতর্ক জেলা প্রশাসন। শুরু হয়েছে তল্লাশি,অভিযান। সেই অভিযান চালাতে গিয়েই কেঁচো খুড়তেই বেরিয়ে এল কেউটে। তারিখ পেরিয়ে গিয়েছে,তবু সেই রক্তই ঢুকছে মানুষের শরীরে। তারিখ পেরিয়ে গিয়েছে, তবু সেই ওষুধ দেওয়া হচ্ছে রোগীদের। শিশু পাচারচক্রের পর প্রকাশ্যে এল বর্ধমান শহরের নার্সিংহোমগুলির কঙ্কালসার চেহারা। প্রকাশ্যে এল মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা, সামনে এল চিকিৎসা নিয়ে ছেলেখেলার ছবি।
আজ সকালে বর্ধমানের একাধিক নার্সিংহোমগুলিতে বর্ধমানের জেলা শাসক ডঃ সৌমিত্র মোহনের নেতৃত্বে তল্লাশি চালায় জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা। অভিযান চলাকালীন চাঞ্চল্যকর ছবি ধরা পড়ে নার্সিংহোমগুলিতে। দেখা যায় পুরুষ ওয়ার্ডেই ভর্তি রয়েছে প্রসূতি ও শিশু৷ নবাবহাট নার্সিংহোম থেকে উদ্ধার করা হয় তারিখ পেরিয়ে যাওয়া ওষুধ ও রক্ত। সামান্যতম পরিকাঠামোও নেই সিমস নার্সিংহোমে। নার্সিংহোম দুটিকে সিল করে দেওয়ার নির্দেশ দেন জেলাশাসক। পাশাপাশি দিশান ও অন্নপূর্ণা নার্সিংহোমে তল্লাশি চালিয়েও চক্ষু চড়কগাছ স্বাস্থ্য আধিকারিকদের। জেলাশাসক জানান, প্রাথমিক সরকারি নিয়মগুলিও মানছে না নার্সিংহোমগুলি। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের পাশাপাশি নেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাও। এদিনে অভিযানে নার্সিংহোমগুলির যে চেহারা সামনে এসেছে, তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জেলাশাসক ডঃ সৌমিত্র মোহন। দুটি নার্সিংহোম সিল করে দেওয়ার পাশাপাশি দিশান ও অন্নপূর্ণা নার্সিংহোম দুটিকে শো-কজ করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে ইতিমধ্যেই আটক করা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পাশাপাশি নার্সিংহোমগুলির রেজিস্টার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সেগুলি।
এদিনের অভিযানে প্রকাশ্যে এসেছে নার্সিংহোমগুলিতে দালালচক্রের রমরমা। কমিশনের ভিত্তিতে সাধারণ মানুষকে উন্নতমানের চিকিৎসা পরিষেবা পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্দিষ্ট নার্সিংহোমগুলিতে নিয়ে যাচ্ছে দালালরা। সামান্য পরিষেবার বদলে বিরাট অঙ্কের বিল দেখে মাথায় হাত পড়ছে সাধারণ মানুষের। সর্বস্বান্ত হচ্ছেন তারা। এদিন বর্ধমানের জেলাশাসক জানান, শুধুমাত্র শিশু পাচারচক্র রুখতেই নয়, বর্ধমানবাসী পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য পরিষেবা পাচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে বারবার এ ধরণের অভিযান চালানো হবে। জেলাশাসকের এই উদ্যোগে প্রাণ বাঁচল কয়েক হাজার মানুষের।
প্রতিটি তাজা আপডেট পেতে
Facebook এর Page টি তে
Like করুন নিচের Link দেওয়া হলো ।
Link ☞ Sk Md Samim sms
0 Comments